স্বাভাবিক বিচারিক ও আপিল প্রক্রিয়ার বাইরে স্বল্পতম সময়ে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াকে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (ADR) বলে। এটি একটি ঐচ্ছিক ব্যবস্থা। এটি বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটি সামগ্রিক ও বহুপাক্ষিক পর্যালোচনা যাতে উভয়পক্ষ লাভবান হয়ে থাকে। এতে করদাতারা তাদের মামলার খরচ থেকে রেহাই পেয়ে থাকে তেমনি সরকারও দ্রুত রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। এতে করদাতা ও সরকার উভায়ই উপকৃত হয়। বিশ্বব্যাপী কর প্রশাসনে এডিআর পদ্ধতির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১১-১২ অর্থবছর হতে বাংলাদেশের শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) প্রশাসনে এ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আপীল, ট্রাইবুনাল বা মহামান্য হাইকোর্ট/ সুপ্রীম কোর্টে বিচারধীন মামলার ক্ষেত্রে ADR এর মাধ্যমে উক্ত মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক তালিকাভূক্ত এবং সংশ্লিষ্ট কমিশনরেট, আপীলাত কমিশনারেট বা ক্ষেত্রমত আপীলাত ট্রাইবুনাল কর্তৃক মনোনীত একজন নিরপেক্ষ সহায়তাকারীর মধ্যস্থতায় করদাতা ও বিভাগীয় প্রতিনিধির মতৈক্যের ভিত্তিতে চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মূসক বিভাগের বিভাগীয় প্রতিনিধির একটি তালিকা প্রণয়ন করে। এক্ষেত্রে মামলাটি যে আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট পেন্ডিং আছে উক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণপূর্বক আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করতে হয়। বর্তমানে মূসক মামলা এডিআর এ নিষ্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সহায়তাকারী রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট তন্মধ্যে কোন একজনকে একটি মামলার জন্য নিয়োজিত করে থাকে। মামলা নিষ্পত্তির জন্য করদাতাকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে মামলার মূল্যমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমানে ফি, ৫০০ টাকা মূল্যমানের স্ট্যাম্প ও বিরোধীয় বিষয় সংশ্লিষ্ট দলিলাদি প্রদান করতে হয়। এডিআরে মতৈক্য না হওয়ার ক্ষেত্রে করদাতা পূনরায় আপীল প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে পারেন।